যে কারণে নিয়োগ পরীক্ষায় ডাক পায়নি বেরোবি শিক্ষার্থী স্বল্পনা রানী

0

বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক পদে শিক্ষক নিয়োগ আবেদন প্রক্রিয়ায় ভুল থাকার কারণে পরীক্ষায় ডাক পায়নি ২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ছাত্রী স্বল্পনা রানী। সঠিকভাবে আবেদনের জন্য বিভাগের অন্য শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা পরীক্ষায় ডাক পেলেও সরকারি চাকরী করার কারণে তার আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে না হওয়ায় বিভাগীয় প্লানিং কমিটি তার আবেদন বাতিল করেন। নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যে বানোয়াট তথ্য প্রচার করছে বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

জানা যায়, স্বল্পনা রানী ২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারিতে মিঠাপুকুরের তারাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ‘৬’ নং শর্ত অনুযায়ী ‘চাকরিরত প্রার্থীকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে’। কিন্তু স্বল্পনা রানী সরকারি চাকুরীজীবি হওয়া শর্তেও তার আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে করেনি। এজন্য তিনি প্রাথমিক যাচাই বাছাইয়ে বাদ পরে যান। ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদের এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

এ নিয়োগে সর্বমোট ২৭ জন প্রার্থী আবেদন করেন। তবে আবেদন প্রক্রিয়া যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে না হওয়ায় স্বল্পনা রানীে এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক সহ তিনজনকে বাদ দেয় বিভাগীয় প্লানিং কমিটি। আবেদন কোনরকম ভুল না থাকায় প্রাথমিকভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ২৪ জনকে চিঠি, ফোন এবং এসএমএস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে ২০ জন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ছাত্রনেতারা বলছেন, বর্তমান প্রশাসন অত্যান্ত নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। অথচ একটি অশুভ চক্র কোন রকম ইস্যু না পেয়ে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রচারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে চায়। যাদের প্রধান টার্গেটই হলো বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অস্থীতিশীল করা। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত আরেক প্রার্থীর ভুলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। নানা নাটকীয়তা শেষে সঠিক তথ্য প্রকাশ হওয়ার পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে ব্যাপারটি পরিস্কার হয়ে যায়।

সাবেক ভিসি নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর অনিয়ম দুর্নীতির সহযোগী এক শিক্ষকের নেতৃত্বে চক্রটি এখন আবার স্বল্পনা রানীকে ব্যবহার করে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। কিন্তু এবারও তাদের ষড়যন্ত্র ধোপে টিকলো না। শিক্ষার্থীরা গত প্রশাসনকেও দেখেছে, বর্তমান প্রশাসনকেও দেখছে। আমরা কিছুই ভুলে যায়নি। আমরা বুঝে গেছি কাদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ। নিয়োগ পরীক্ষায় ডাক না পাওয়া পার্থী স্বল্পনা রানী বলেন, সবাইকে চিঠি দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে চিঠি দেয়নি। পরে আমি খোঁজ নিতে গেলে তারা আমাকে বলে আমি সরকারি চাকরি করি, কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করিনি বলে আমি ডাক পাইনি। এরপর আমি আর কোন অভিযোগ করিনি। শুনেছি এই কারণে আমি সহ তিনজন বাদ পরেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরীক্ষায় অংশ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি পরীক্ষার্থী ছিলাম। যথাসময়ে চিঠি পেয়ে পরীক্ষায় উপস্থিত হয়েছিলাম। আমার মনে হয়না কোন ইনজাস্টিস হয়েছে। আমি এটাও মনে করি না, আমার বিভাগের শিক্ষকরা কোনো শিক্ষার্থীর প্রতি ইনজাস্টিস করবে। একটা আবেদনে কিছু শর্ত থাকে। সেগুলো পূরণ না করলে স্ক্রিনিং এর সময় অনেকেই বাদ পরে যায়। হয়তো যারা বাদ পরেছে কিংবা পরীক্ষার জন্য ডাক পায়নি, তাদের আবেদনে কোথাও ভুল ছিলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও বিভাগের প্লানিং কমিটির এক সদস্য বলেন, বিজ্ঞাপিত আবেদন থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট সহ আবেদন না করার কারণে আমরা মোট তিন জনের আবেদন বাতিল করি। এখানে কে বাদ পড়ল সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় না। আমরা নিয়ম মেনেই সব কিছু করেছি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী বলেন, কোনো সঙ্গত কারণেই হয়তো তিনি চিঠি পাননি। যোগ্যতা থাকলে তো চিঠি না পাওয়ার কথা না। আর আমি এখন ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছি।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.